জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬ এ কয়লার ব্যবহার বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ১৯০টি দেশ-সংস্থা। পরিবেশের জন্য বিপর্যয়কর কার্বন ও গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ রোধ করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো শহরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলনে (কপ-২৬) ১৯০টি দেশ ও সংস্থা অঙ্গীকারপত্রে এই মর্মে স্বাক্ষর করেছে যে, তারা নিজেদের দেশে নতুন কোনো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করবে না। তার পরিবর্তে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। এ ছাড়া বর্তমানে যেসব কয়লা প্রকল্প চালু আছে, ধীরে ধীরে সেগুলোকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে রূপান্তর করা হবে।
পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও চিলির মতো অনেক উন্নয়নশীল ও মধ্যম আয়ের দেশ যাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন বহুলাংশে কয়লা নির্ভর তারাও এই অঙ্গীকারপত্রে স্বাক্ষর করেছে। তবে কয়লা ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে চারটি দেশ শীর্ষে তারা এই অঙ্গীকারপত্রে সই করা থেকে বিরত ছিল। দেশগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত।
কপ-২৬ প্রতিশ্রুতিপত্র অনুযায়ী, স্বাক্ষরকারী বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের চলমান কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে রূপান্তরিত করবে। আর উন্নয়নশীল ও মধ্যম আয়ের দেশসমূহের জন্য এই সময়সীমা ধরা হয়েছে ২০৪০ সাল।
জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার বন্ধের এই প্রতিশ্রুতিতে এতগুলো দেশ স্বাক্ষর করায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে কপ-২৬ সম্মেলনের আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য।
আন্তর্জাতিক পরিবেশবিদদের মতে, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবকগুলোর ভেতর অন্যতম হিসেবে কাজ করছে কয়লা। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রতি বছর যে পরিমাণ কার্বন ও গ্রিনহাউস গ্যাস মেশে, তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশের উৎস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলমান কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে তুলনায় বিশ্বজুড়ে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু তারপরও এখন পর্যন্ত বিশ্বের মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৩৭ শতাংশই আসে কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলো থেকে।