তুরস্কের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনার পর পরই ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাশিয়া।
মস্কো জানিয়েছে, তারা রাজধানী কিয়েভের চারপাশে এবং উত্তরাঞ্চলীয় চেরনিহিভ শহরে তাদের সামরিক তৎপরতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে দেবে।
২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে সবচেয়ে ইতিবাচক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্দার ফোমিন বলেছেন, তাদের এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হচ্ছে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি করা এবং আরও সমঝোতার পরিবেশ তৈরি করা।
তুরস্কে তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠকের পর তুর্কী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভুলত কাভুসগলুও আলোচনায় বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার পর থেকে এবারই উল্লেখযোগ্য রকমের অগ্রগতি ঘটলো।
রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন, এই আলোচনা এখন এক বাস্তব পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে।
কিয়েভের ওপর রাশিয়ার সামরিক আক্রমণের পরিকল্পনা অনেকদিন ধরেই থমকে আছে।
ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রতিরোধের মুখে রাজধানীর আশেপাশের কিছু জায়গা থেকে রুশ বাহিনী ইতোমধ্যে পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় মারিউপোলসহ যেসব জায়গায় বড় ধরনের সংঘর্ষ হচ্ছে সেসব জায়গার ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।
ইস্তাম্বুলের শান্তি সংলাপে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলটি জানিয়েছে, তাদেরকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেয়া হলে পশ্চিমা প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোতে যোগ না দিয়ে তারা নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ভূমিকা পালনের প্রস্তাব দিয়েছে।
আর এটাই রাশিয়ার প্রধান দাবি।
শিয়ার প্রতিনিধি দলটি জানিয়েছে, তারা এই প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে পৌঁছে দেবেন।
রাশিয়ার ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্দার ফোমিন শান্তি আলোচনায় অংশ নেন।
রুশ টেলিভিশনকে তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা এবং পরমাণু-মুক্ত মর্যাদা এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে’ অগ্রগতি হয়েছে।
এর পরই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামরিক তৎপরতা নাটকীয়ভাবে কমিয়ে আনার কথা ঘোষণা করে।
ইউক্রেন পক্ষের মধ্যস্থতাকারী ওলেকসান্দার চ্যালি সাংবাদিকদের বলেছেন, তাদের দেশের ‘ভৌগলিক অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার জন্যেই ইউক্রেনের নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে তা অর্জন করা হবে।’
ইউক্রেন বলছে, কিয়েভ ও চেরিনিহিভ এই দুটো জায়গা থেকে রুশ সেনা কমিয়ে আনার লক্ষণ তারা দেখতে পাচ্ছেন।
তবে তারা বলছেন, নতুন সৈন্য মোতায়েন রাশিয়ার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো মীমাংসা হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির মধ্যে সামনাসামনি একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে।