চলতি মাসে দ্বিতীয়বারের মত ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডি আফ্রিকার দক্ষিণ অংশের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউইতে আঘাত হানে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, প্রবল পানির ঢলে দেশটির বাড়িঘর ভেসে গেছে, বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করে জানিয়েছে, এই ধ্বংসযজ্ঞ মালাউইতে চলমান কলেরার প্রাদুর্ভাবকে আরও বাড়িয়ে দেবে। দেশটির সরকার ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ১০টি জেলায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
উদ্ধারকর্মীরা বেলচা ব্যবহার করে কাদায় চাপা পড়ে থাকা জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। পুলিশের মুখপাত্র পিটার কালায়া বলেন, আমাদের নদীগুলো উপচে পড়ছে, ঢলের পানিতে মানুষ ভাসছে, ভবন ধ্বসে পড়ছে।
একটি শিশুকে উদ্ধার করার ঘটনা স্মরণ করে দেশটির ব্লানটায়ার শহরের বাসিন্দা অ্যারন এনটাম্বো বলেন, শিশুটির মাথা পর্যন্ত কাদায় আটকে ছিল এবং সে চিৎকার করছিল। যদিও পানির প্রবাহ খুব শক্তিশালী ছিল তবুও আমরা বাধা পার হয়ে তাকে উদ্ধার করতে পেরেছি। কাজটি খুব কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা তাকে বের করে আনতে পেরেছি।
মেডিক্যাল দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, হাসপাতালে পৌঁছানোর পর ৪০-এর বেশি শিশুকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের দুর্যোগ ত্রাণ সংস্থা জানিয়েছে, ২০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় আছে।
একটানা বৃষ্টি ও প্রচণ্ড বাতাসের কারণে কিছু কিছু এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝড়ের ফলে মালাউইয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। দেশের বেশিরভাগ অংশই ব্ল্যাকআউটের সম্মুখীন হচ্ছে।
দেশটির বিদ্যুৎ কোম্পানি জানিয়েছে, তাদের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অচল হয়ে পড়েছে। এটি একটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
দেশটিতে রাস্তা ও সেতু ভেঙে পড়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে, অপরদিকে ভারী বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের কারণে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছেনা।
মালাউইয়ের এমন বিপদের মুহূর্তে দেশটির সরকার খাদ্য ও আশ্রয়হীন হাজার হাজার মানুষের জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মতে, ফ্রেডি সবচেয়ে শক্তিশালী গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় যা আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।