প্রচ্ছদ ›› আন্তর্জাতিক

টিকা নয়, উত্তর কোরিয়ায় করোনা মোকাবিলায় লবণ-পানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০ মে ২০২২ ১২:২৩:১৩ | আপডেট: ২ years আগে
টিকা নয়, উত্তর কোরিয়ায় করোনা মোকাবিলায় লবণ-পানি

করোনা ভাইরাসের কোনো টিকা এবং কার্যকরী অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ ছাড়া সংকট মোকাবেলার চেষ্টা করছে উত্তর কোরিয়া। মহামারির হাত থেকে রক্ষার জন্য ২০২০ সালের শুরুর দিকে দেশটি তাদের সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল। সে সময় বিভিন্ন দেশ টিকা সরবরাহ করতে চাইলেও দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং উন তা নিতে রাজি হননি। তিনি শুধু সীমান্ত বন্ধ করেছিলেন।

এখনো পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার সরকার বিদেশী চিকিৎসা সহায়তা নিতে রাজি হয়নি। ‘জ্বর’ থেকে মুক্তি পেতে উত্তর কোরিয়ার সব রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে সনাতনী চিকিৎসা করার আহবান জানানো হচ্ছে।

গরম পানীয়
যারা গুরুতর অসুস্থ নয়, তাদের আদা অথবা হানিসাকল (এক ধরণের ঔষধি গুণসম্পন্ন পাতা ও ফুল) চা পান করা এবং ইউলো পাতার পানি পান করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দলের পত্রিকা রডং সিমনান।

এ ধরণের গরম পানীয় গলা ব্যথা এবং কফের মতো করোনা ভাইরাসের হালকা লক্ষণ থেকে আরাম দিতে পারে। এছাড়া শরীর থেকে বেশি পানি বের হয়ে গেলে সেটির অভাবও পূরণ হয়।

আদা এবং ইউলো পাতা শরীরের প্রদাহ এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

কিন্তু এগুলো করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা নয়।

লবণ পানি
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সম্প্রতি এক দম্পতির সাক্ষাৎকার নিয়েছে, যারা সকাল-বিকাল লবণ পানি দিয়ে গার্গল করার পরামর্শ দিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাজধানী পিয়ংইয়ং-এ এক হাজার টন লবণ পাঠানো হয়েছে।

কোন কোন গবেষণায় বলা হয়েছে, লবণ পানি দিয়ে গার্গল করা সাধারণ ভাইরাস জনিত ঠাণ্ডা লাগা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

তবে এটি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থামানোর মতো যথেষ্ট প্রমাণ নেই।

গবেষণাগারের পরীক্ষায় দেখা গেছে, মাউথওয়াশ করোনা ভাইরাস ধ্বংস করতে পারে। তবে মানুষের শরীরে ভাইরাস সংক্রমিত হলে, সেটি করতে পারে কি না - সে সম্পর্কে কোন প্রমাণ নেই।

পেইন কিলার ও অ্যান্টিবায়োটিক
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পরামর্শ দিচ্ছে, আইবুপ্রোফেন-এর মতো ব্যথানাশক ঔষধ এবং অ্যামোক্সিসিলিন-এর মতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করার জন্য।

আইবুপ্রোফেন শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং মাথাব্যথা ও গলাব্যথার উপশম দিতে পারে।

কিন্তু এসব ওষুধ দ্বারা ভাইরাস যাবে না।

অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয় ব্যাকটেরিয়া জনিত ইনফেকশনের জন্য, ভাইরাসের জন্য নয়। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার শরীরের ক্ষতি করতে পারে।

গবেষণাগারের পরীক্ষায় দেখা গেছে, কিছু অ্যান্টিবায়োটিক করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য ভাইরাসের বিস্তার কিছুটা থামাতে পারে।

কিন্তু বাস্তবে সেটির প্রতিফলন পাওয়া যায়নি।

চিকিৎসা ব্যবস্থা
উত্তর কোরিয়ার সকল নাগরিককে মৌলিক চিকিৎসা সেবা দেবার পাশাপাশি বিনা খরচে সরকারি হাসপাতালে বিশেষায়িত চিকিৎসাও দেয়া হয়।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং তীব্র খরার কারণে দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে।

এসব কারণে রাজধানী পিয়ংইয়ং-এর বাইরের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা কর্মী, ঔষধ এবং যন্ত্রাপাতির সংকট রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা কর্মসূচি গ্রহণ না করায় দেশটির আড়াই কোটি মানুষ বেশ ঝুঁকিতে আছে।

গত বছর বিভিন্ন দেশ উত্তর কোরিয়াকে করোনা ভাইরাসের টিকা সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তারা সেসব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে।

সূত্র- বিবিসি বাংলা