তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সিরিয়া সীমান্তের কাছে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে এ পর্যন্ত সিরিয়া এবং তুরস্ক মিলিয়ে অন্তত ১০০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। (খবর বিবিসির)
সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছেই এ কম্পন ঘটে। এর গভীরতা ছিল ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৮ এবং এটি স্থানীয় সময় ভোর সোয়া চারটার দিকে আঘাত হানে। গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে এর গভীরতা ছিল মাত্র ১৭.৯ কিলোমিটার।
তুরস্ক এবং সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা দ্রুতই বাড়ছে। তুরস্কে এখনো পর্যন্ত ৯১২ জন নিহত এবং দুই হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। অন্যদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে দেশটিতে অন্তত ২৩৭ জন নিহত এবং ছয় শতাধিক আহত হয়েছে।
ভূম্পিকম্পটি রাজধানী আঙ্কারা এবং তুরস্কের অন্যান্য শহরেও অনুভূত হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট পুরো অঞ্চল জুড়েই কম্পন অনুভূত হয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, অনেক ভবন ধসে পড়েছে এবং বহু মানুষ ভেতরে আটকা পড়েছে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সুলেইমন সইলু বলেন, ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালাতিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির এবং কিলিস।
প্রতিবেশি দেশ সিরিয়া, লেবানন এবং সাইপ্রাসেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের শিক্ষারী মোহামাদ এর ছামা বলেন, "আমি কিছু একটা লিখছিলাম এবং হঠাৎ করেই পুরো ভবন কাঁপতে শুরু করে। আমি বুঝতে পারছিলাম না যে কী হচ্ছে।"
"আমি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম এবং আমার ভয় হচ্ছিলো যে সেগুলো ভেঙে পড়বে। প্রায় ৪-৫ মিনিট ধরে এটা চলে এবং পুরো বিষয়টি ভয়ংকর ছিল। এটা অভূতপূর্ব ছিল।"
দিয়ারবাকিরে থাকা বিবিসির তুরস্ক প্রতিনিধি বলেন, শহরটির একটি শপিংমল ধসে পড়েছে।
গাজা উপত্যকায় থাকা বিবিসির প্রযোজক রুশদি আবুয়ালুফ বলেন, তিনি যে বাড়িতে থাকেন সেখানে প্রায় ৪৫ সেকেন্ড ধরে কম্পন অনুভূত হয়েছে।
স্থানীয় সিসমোলজিস্টরা ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭.৮ ছিল বলে জানাচ্ছেন।
তারা বলছেন যে, ভূমিকম্পটি আঘাত হানার কয়েক মিনিট পরেই দ্বিতীয় আরেকটি কম্পন অনুভূত হয়।
তুরস্ক পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলগুলোর একটিতে অবস্থিত।
এর আগে ১৯৯৯ সালে দেশটির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।