প্রচ্ছদ ›› আন্তর্জাতিক

ফ্রান্সে বিক্ষোভ: চতুর্থ দিনে গ্রেপ্তার ১১০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০১ জুলাই ২০২৩ ১৬:০০:৩১ | আপডেট: ১ year আগে
ফ্রান্সে বিক্ষোভ: চতুর্থ দিনে গ্রেপ্তার ১১০০

পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল ফ্রান্স। চার দিন ধরে চলছে সহিংস বিক্ষোভ। শুক্রবারও দেশটির অনেক শহরে বিক্ষোভ হয়। এসময় বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। দাঙ্গা ও লুটপাটে জড়িত থাকার অভিযোগ এ পর্যন্ত ১১০০ এর বেশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত দুই শতাধিক পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। খবর বিবিসির।

ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন শনিবার বলেছেন, গতকাল রাতে ২৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে সহিংসতার সঙ্গে জড়িত মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১১০০ তে দাঁড়িয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফ্রান্সের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মার্সেইতে গত রাতে অন্তত ৮০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়াও শহরটিতে আরও তিন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছে।

মার্সেইয়ের মেয়র বেনোইট পায়ান সরকারকে অবিলম্বে অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার রাতে টুইট করে তিনি বলেন, ‘লুটপাট এবং সহিংসতার দৃশ্যগুলি অগ্রহণযোগ্য।

অপরদিকে ফ্রান্সের তৃতীয় বৃহত্তম শহর লিয়নে একটি হেলিকপ্টার এবং সাঁজোয়া কর্মী বাহক মোতায়েন করা হয়েছে।

হাল্কা সাঁজোয়া যানে সজ্জিত অন্তত ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অস্থিরতা রোধ করার প্রয়াসে ক্র্যাক পুলিশ ইউনিট এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি দারমানিনকে উদ্ধৃত করে বলেছে, গত রাতের সহিংসতায় ‘তীব্রতা কম’ ছিল। সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে ২০০ জনের বেশি পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। দাঙ্গাকারীদের গড় বয়স ছিল ১৭ বছর।

মার্সেই এবং লিয়ন শহরে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা এবং লুটপাট চালানো হয়েছে। প্যারিসের শহরতলীতেও বিক্ষিপ্ত সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ অভিভাবকদের অপ্রাপ্তবয়স্ক দাঙ্গাকারীদের দায়িত্ব নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্নও দেশজুড়ে বড় মাপের অনুষ্ঠান বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন।

গত মঙ্গলবার প্যারিসের নান্টেরে শহরে গাড়ি চালানো অবস্থায় নাহেল এম নামে নাইজেরিয়ান ও আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলি করে পুলিশ। এতে কিশোরের মৃত্যুর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি বিধ্বস্ত হয়।

নিহত কিশোর নাহেলের মা ফরাসি টিভি ফ্রান্স ৫ কে বলেন, ‘আমি পুলিশকে দোষ দিই না, আমি একজনকে দোষ দেই যে আমার ছেলের জীবন নিয়েছে।’ নাহেলকে হত্যার জন্য অভিযুক্ত অফিসার বলেছেন, তিনি গুলি চালিয়েছিলেন কারণ তিনি ধারনা করেছিলেন যে তার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ। তার আইনজীবী ফরাসি রেডিও স্টেশন আরটিএলকে জানিয়েছেন, তার মক্কেল তার আগ্নেয়াস্ত্রটি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছেন।

নাহেলের মৃত্যুর জন্য ওই ফরাসি পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তাকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।

জাতিসংঘের অধিকার অফিস শুক্রবার বলেছে, উত্তর আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কিশোরের হত্যাকাণ্ড ‘আইন প্রয়োগে বর্ণবাদ এবং জাতিগত বৈষম্যের গভীর সমস্যাগুলিকে গুরুত্ব সহকারে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে দেশের জন্য একটি মুহূর্ত ছিল।’