আন্তর্জাতিক নারী দিবসে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আমরা বিশ্বের সব জায়গার নারী ও মেয়েদের অবদানকে স্বীকার করছি। পাশাপাশি তারা যে কাঠামোগত অবিচার, প্রান্তিকীকরণ ও সহিংসতা থেকে শুরু করে বহুমাত্রিক সংকটসহ নানাবিধ বাধার মুখোমুখি হয়, আমরা তাও স্বীকার করে নিচ্ছি।
১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘ দিনটি ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’- হিসেবে পালন করছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্যে জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
গুতেরেস বলেন, যে নারীরা সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত স্বাধীনতাবঞ্চিত হয় নিজেদের জীবন ও দেহের ওপর, তারাই সবচেয়ে বেশি অধিকার খর্বিত হয়। জেন্ডার পরিচয়জনিত বৈষম্য নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী- সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস এসব প্রতিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ব্যাপক ত্যাগ স্বীকার করে নিজেদের মৌলিক অধিকারের দাবি জানানো নারীদের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। যৌন নিপীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধে নারীর সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নারীর সর্বাত্মক অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা তরাণ্বিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রযুক্তি নারী ও কিশোরীদের শিক্ষা ও সুযোগ সৃষ্টির পথ প্রশস্ত করতে পারে। তবে প্রযুক্তির অপব্যবহারে বিদ্বেষ ও নিপীড়ন বৃদ্ধির আশঙ্কাও থাকে।
আজ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে নারীর অংশগ্রহণ এক-তৃতীয়াংশেরও কম। কিন্তু নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে নারীর প্রতিনিধিত্ব কম থাকলে শুরুতেই বৈষম্য সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ঠিক এ কারণেই আমাদের ডিজিটাল বিভক্তি দূর করতে হবে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নারী ও কিশোরীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে বলে জোর দিয়েছেন গুতেরেস।
গুতেরেস বলেন, ডিজিটাল জগতে নারীর পর্যাপ্ত পদচারণা না থাকায় গত দশকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জিডিপির আকার ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো কম হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে এই ক্ষতি ২০২৫ সাল নাগাদ বেড়ে ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার হবে।
নারীর ওপর বিনিয়োগ সব মানুষ, সমগ্র সমাজ ও দেশের উন্নয়ন ঘটায়। আসুন, সরকার, বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজ একসঙ্গে কাজ করে নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরীদের জন্য সর্বত্র আরও বেশি অন্তর্ভূক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ে তুলি।