প্রচ্ছদ ›› আন্তর্জাতিক

ভাগ্য বদলে যাচ্ছে ৫০ লাখ আসমিয়া মুসলিমের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৬ জুলাই ২০২২ ১৫:৪৯:২৪ | আপডেট: ২ years আগে
ভাগ্য বদলে যাচ্ছে ৫০ লাখ আসমিয়া মুসলিমের

ভারতের আসামের পাঁচটি আসমিয়া মুসলিম সম্প্রদায়কে আদিবাসী হিসেবে মর্যাদা দিতে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। এর মাধ্যমে আসামে বাংলাভাষী মুসলিমদের থেকে আলাদা হলেন অসমিয়াভাষী মুসলিমরা। এ পদক্ষেপের ফলে স্বাস্থ্য, সাংস্কৃতিক পরিচয়, শিক্ষা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে তাদের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার। খবর এনডিটিভি ও হিন্দুস্থান টাইমসের।

আদিবাসী স্বীকৃতি পাওয়া সম্প্রদায়গুলো হলো- গোরিয়া, মোরিয়া, দেশী, জুলাহ ও সৈয়দ। এই পাঁচ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের আসমিয়া মুসলিম উপ-গোষ্ঠী বা আদিবাসী আসমিয়া মুসলিম হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হবে।

আসামের মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের পর মুখ্যমন্ত্রী শর্মা টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।

আসামের ৩ কোটি ১২ লাখ জনসংখ্যার ৪৩ ভাগই মুসলমান, যার মধ্যে চার শতাংশ হল “আদিবাসী অসমিয়া মুসলমান” এবং বাকিরা অধিকাংশই বাংলাভাষী মুসলমান। এর মধ্যে অন্তত ৫০ লাখ মুসলিম ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়া না পাওয়ার জটিলতায় রয়েছেন। বলা হচ্ছে, তারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময় গিয়েছেন। যদিও নানা প্রতিবাদের মুখে এনআরসি থেকে সরে আসে দেশটির সরকার।

হিন্দুস্থান টাইমসের খবরে বলা হয়, রাজ্য সরকার জানিয়েছে, অসম সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের আবেদনের ভিত্তিতেই এই শংসাপত্র তৈরি করছে রাজ্য সরকার। এর ফলে সহজে সংখ্যালঘুদের চিহ্নিত করা যাবে। তাদের জন্য একাধিক সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্প রয়েছে, আলাদা দপ্তর রয়েছে। এবার সংখ্যালঘুদের চিহ্নিত করে সরকারি সাহায্য পৌঁছে দেয়া যাবে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর গোরিয়া উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারপার্সন হাফিজউল আহমেদ বলেছেন, তারা ২০০৬ সাল থেকে সম্প্রদায়ের জন্য একটি পৃথক শ্রেণিভাগের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু যেহেতু এমন কিছু ছিল না, তাই তারা বাংলাভাষী মুসলমানদের চাপ এবং এ চিন্তা থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলেন। এ সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এর আগে গত ৩০ মে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার রাজ্যের মুসলিম, খ্রিস্টান, জৈন, শিখ, বৌদ্ধ ও পার্সিদের সংখ্যালঘু শংসাপত্র দেয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবও পাশ করা হয়েছিল মন্ত্রিসভায়। ওই সময় হিমন্ত দাবি করেছিলেন, জেলার জনসংখ্যার ভিত্তিতে সংখ্যালঘু নির্ণয় করা উচিত।

তিনি বলেন, একটি সম্প্রদায় সংখ্যালঘু কি না, তা রাজ্য বা জেলার মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা উচিত।

এর আগে অসমেব বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে হিমন্ত শর্মা বলেছিলেন, এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং সংবিধানের ২৫ থেকে ৩০ অনুচ্ছেদে দেয়া সংজ্ঞা অনুসারে, সরাসরি কেউ বলতে পারে না যে মুসলিম, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টানরা সংখ্যালঘু। কারণ তারা একটি নির্দিষ্ট রাজ্যে সংখ্যালঘু তবে অন্য রাজ্যে তারা সংখ্যালঘু নাও হতে পারেন। একটি সম্প্রদায় সংখ্যালঘু কি না তার সংজ্ঞা সেই নির্দিষ্ট রাজ্য বা জেলার বর্তমান জনসংখ্যার উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। এটি উদ্বেগের বিষয় এবং বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টেও এর শুনানি চলছে।