অবশেষ রাশিয়ায় ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কোকাকোলা, পেপসি কো, ম্যাকডোনাল্ডসের মতো বহুজাতিক কোম্পানি। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইতোমধ্যে নেটফ্লিক্স, লিভাইজের মতো পশ্চিমী বহুজাতিক সে দেশে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করে। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হলো কোমল পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থা কোক, পেপসি এবং খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থা ম্যাকডোনাল্ডস, স্টারবাকস। (খবর বিবিসি’র)।
ইউক্রেনের উপর হামলা ঘোষণা পর থেকেই রাশিয়ার উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে চলেছে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। প্রাথমিক ভাবে যা ছিল আমেরিকা ও পশ্চিমী দেশগুলোর তরফে কেবলমাত্র অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, দিনে দিনে তা ক্রমশ সামাজিক বয়কটের সমতুল্য হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আমেরিকা ও তার বন্ধু পশ্চিমা দেশগুলোর অভ্যন্তরে সেই দেশের বিভিন্ন বহুজাতিক, যারা রাশিয়াতেও রমরমিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠতে শুরু করেছে। এই প্রেক্ষিতেই রাশিয়ায় ব্যবসা আংশিক গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেটফ্লিক্স, টিকটক। রাশিয়ার জাতীয় টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করেছে নেটফ্লিক্স। সংস্থার দাবি, অনির্দিষ্টকালের জন্য রাশিয়া থেকে সমস্ত সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়ার পথে হাঁটছে তারা। এই প্রেক্ষিতে কোক, পেপসি, ম্যাকডির উপর রাশিয়ায় ব্যবসা বন্ধের জন্য চাপ ক্রমশ বাড়ছিল।
আমেরিকা-সহ পশ্চিমা দেশে এই সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত হতে শুরু করায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নেয়। সেই দেশের জনপ্রিয় তারকাদের একটি অংশ সরাসরি দেশবাসীর কাছে এই সংস্থার পণ্য বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছিলেন। তারা বলেন, যতদিন এই সংস্থাগুলো রাশিয়ায় ব্যবসা চালিয়ে যাবে, ততদিন তাদের বয়কট করা হোক। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সম্ভবত সেই চাপের কাছে মাথা নত করেই আপাতত রাশিয়ায় তাদের সমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ করে দিল কোক, পেপসি, স্টারবাকস, ম্যাকডোনাল্ডস।
তবে এই পরিস্থিতিতেও খানিক ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে কেএফসি এবং পিজা হাট। তারা স্পষ্ট জানিয়েছে, রাশিয়ায় তারা নিজেরা ব্যবসা করে না। সত্ত্ব কিনে সেখানকার লোকেরাই তাদের নাম ব্যবহার করে ব্যবসা চালায়। তাই বাকিদের মতো ঘোষণা করে তাদের পক্ষে রাশিয়া ছাড়ার প্রশ্ন নেই। যদিও এই সংস্থা দুটি জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ তারা মানবোন্নয়নের পিছনে খরচ করবে। প্রসঙ্গত, রাশিয়ায় হাজারেরও বেশি কেএফসি-র দোকান রয়েছে।