রাশিয়া-ইউক্রেনের লড়াইয়ে অতি সাবধানী পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত৷ ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি৷
কোনও পক্ষ না নিয়ে ভারত চাইছে আলোচনার মাধ্যমেই ইউক্রেনের সংকট কেটে যাক৷ সরাসরি রুশ বিরোধী অবস্থান না নিয়ে ভারতের এই কৌশলের পিছনে অবশ্য নির্দিষ্ট কারণও রয়েছে৷
ভারতের জন্য ইউক্রেন সমস্যা উভয় সঙ্কটের মতোই৷ কারণ একদিকে পুরনো বন্ধু রাশিয়াকে যেমন চটানো যাবে না, সেরকমই পশ্চিমী দুনিয়ায় নতুন করে যে দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দৃঢ় হচ্ছে, তারা রাশিয়া বিরোধী অবস্থান নেওয়ার জন্য ভারতের উপরে চাপ দিচ্ছে৷
যে দেশগুলো থেকে ভারত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনে, তাদের মধ্যে বৃহত্তম সরবরাহকারী রাশিয়া৷ ভারতকে রাশিয়া একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিনও দিয়েছে৷
ভারত রাশিয়ায় তৈরি তিরিশটি ২৭২ এসইউ ফাইটার জেট বিমান ব্যবহার করে৷ রাশিয়ায় তৈরি আটটি কিলো ক্লাস সাবমেরিন রয়েছে ভারতের হাতে৷ এ ছাড়াও ১৩০০-র বেশি রুশ টি-৯০ ট্যাঙ্কও ব্যবহার করে ভারত৷
আমেরিকার চাপ সত্ত্বেও রাশিয়ার সর্বাধুনিক লম্বা দূরত্বের সারফেস টু এয়ার মিসাইল এস ৪০০ ডিফেন্স সিস্টেম কেনার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে ভারত৷ এই মিসাইল সিস্টেম কেনার জন্য ২০১৮ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে ভারত৷ রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদেও রাশিয়া বরাবর ভারতকে সমর্থন করে এসেছে৷
বৃহস্পতিবারই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলার সময় ভারতের থেকে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়ার গুরুত্বের কথা জানিয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন৷
আমারেকিরা সঙ্গও ভারতের সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত৷ প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতকে সাহায্য করছে আমেরিকাও৷
চিনের সঙ্গে উত্তেজনার সময় আমেরিকার থেকে যথেষ্ট সমর্থন পেয়েছে ভারত৷ রাষ্ট্রপুঞ্জে ফ্রান্সও ভারতের বন্ধু হিসেবেই ছাপ রেখেছে৷ এই দুই দেশই রাশিয়া বিরোধী অবস্থান নিয়েছে৷ ভারতের থেকেও একই অবস্থান প্রত্যাশা করছে তারা৷
আমেরিকা সহ ইউরোপের প্রতিটি বড় দেশেই যথেষ্ট সংখ্যক ভারতীয়রাও বাস করেন৷ ফলে সবদিক ভেবেই পা ফেলতে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে৷
সূত্র: নিউজ১৮বাংলা