করোনা মহামারীর ভারতের অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ হতে আরও ১২ বছর লাগবে। দেশটির রিজার্ভ ব্যাংকের মতে, ২০৩৪-৩৫ সালে মহামারির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে।
শনিবার ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক তার বার্ষিক ‘কারেন্সি অ্যান্ড ফিনান্স’ রিপোর্টে বলেছে, অতিমারির প্রথম ধাক্কাতেই দেশের অর্থনীতি বা জিডিপি-র ৬.৬ শতাংশ সঙ্কোচন হয়েছিল। বর্তমানে আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি এলেও তা সবেমাত্র কোভিডের আগের পর্যায়ে পৌঁছেছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে অর্থনীতি সমানভাবে ঘুরে দাঁড়ায়নি।
রিজার্ভ ব্যাংকের মতে, মানুষের আয় হ্রাস পড়েছে। ফলে সংসার খরচের পরে হাতে কম টাকা থাকছে। শ্রমিকেরা শহর থেকে গ্রামে ফিরেছেন। তার ফলে বাজারে কেনাকাটা কমেছে। ফলে আর্থিক বৃদ্ধির গতিপথই নীচের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। আপাতত আর্থিক বৃদ্ধি ৬.৫ থেকে ৮.৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে। তবে তা অর্থনীতিতে একগুচ্ছ সংস্কারের উপরে নির্ভর করছে। জিডিপি-র তুলনায় সরকারি দেনার পরিমাণ কমিয়ে আনা জরুরি। জিডিপি-র তুলনায় সরকারি ঋণের হার এখন ৯০ শতাংশ।
রিজার্ভ ব্যাংকের মতে, এই হার আগামী পাঁচ বছরে ৬৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। অর্থনীতির হাল ফেরাতে, বৃদ্ধির হার ধরে রাখতে মূল্যবৃদ্ধি বা জিনিসপত্রের দামও স্থিতিশীল হওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি ধরে রাখতে কম খরচে জমি, শিক্ষা ও কর্মী প্রশিক্ষণে বেশি খরচ করে শ্রমিকদের মানোন্নয়ন, শহরের পরিকাঠামো উন্নতিতে সংস্কার জরুরি।
কোভিডের প্রথম বছর, ২০২০-২১-এ আর্থিক বৃদ্ধির বদলে জিডিপি-র ৬.৬ শতাংশ সঙ্কোচন হয়েছিল। অর্থনীতির পরিভাষা মেনে দেশের অর্থনীতি মন্দার কবলে চলে গিয়েছিল।
ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক বলছে, ২০২১-২২-এ ৮.৯ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধি, চলতি অর্থ বছর, ২০২২-২৩-এ ৭.২ শতাংশ বৃদ্ধি এবং তার পরে ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি ধরে নিয়ে, ভারত কোভিডের ফলে ক্ষতি ২০৩৪-৩৫-এ কাটিয়ে উঠবে বলে আশা করা যায়।
দেশটির রিজার্ভ ব্যাংকের অনুমান অনুযায়ী, ২০২০-২১-এ অর্থনীতির উৎপাদনে লোকসানের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৯.১ লক্ষ কোটি রুপি। ২০২১-২২-এ লোকসানের পরিমাণ ১৭.১ লক্ষ কোটি রুপি। ২০২২-২৩-এ লোকসান ১৬.৪ লক্ষ কোটি রুপি। সূত্র- আনন্দবাজার