প্রচ্ছদ ›› আন্তর্জাতিক

আবারও উত্তাল মণিপুর, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৪০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৮ মে ২০২৩ ২১:১৭:৩০ | আপডেট: ১ year আগে
আবারও উত্তাল মণিপুর, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৪০
ছবি: পিটিআই

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে রোববার ৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ইতোমধ্যে অন্তত ‘৪০ জন জঙ্গি’ নিহত হয়েছেন।

বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির।

রোববার মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং সাংবাদিকদের বলেছেন, সন্ত্রাসীরা এম-১৬ এবং একে-৪৭ রাইফেল ও স্নাইপার বন্দুক বেসামরিক লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। তারা বহু গ্রামে এসে বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে।

বিরেন সিং বলেন, ‘সেনাবাহিনী ও অন্য নিরাপত্তা বাহিনীর সাহায্য নিয়ে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কড়া পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছি। আমাদের কাছে ৪০ জন সন্ত্রাসী নিহতের রিপোর্ট এসেছে। আমি তাদের কুকি জঙ্গি বলব না, তারা কুকি সন্ত্রাসী। তারা নিরস্ত্র বেসামরিকদের গুলি করছে।’

সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা ধারাবাহিকভাবে ইম্ফালের পাঁচটি এলাকা ও এর আশেপাশে রাত ২টায় হামলা চালিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সেকমাই, সুগনু, কুম্বি, ফায়েং এবং সেরউ এলাকায় হামলায় ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া আরও অনেক এলাকায় বন্দুকযুদ্ধ চলছে বলে। সেইসঙ্গে রাস্তায় অজ্ঞাত লাশ পড়ে আছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সেকমাইতে বন্দুকযুদ্ধ শেষ হয়েছে। রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সস (আরআইএমএস)-এর চিকিৎসকরা বলেন, এখন পর্যন্ত তারা ফায়েংয়ে বন্দুকযুদ্ধে আহত ১০ জনকে ভর্তি করেছে।

বিশেনপুরের চন্দনপোকপিতে খুমানথেম কেনেডি (২৭) নামের এক কৃষক একাধিক বুলেটবিদ্ধ হওয়ার পর মারা গেছেন। তার লাশ আরআইএমএস-এ নেওয়া হচ্ছে। এতে আরও হতাহতের শঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে মেইতেই গোষ্ঠীর সঙ্গে কুকিদের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। রাজ্যজুড়ে চলে তুমুল সংঘর্ষ। তাতে ৫৪ জনের বেশি জন নিহত হয়। ঘরছাড়া হয় হাজার হাজার বাসিন্দা। শত শত বাড়ি, গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। চলে ব্যাপক ভাঙচুর।

সেইবারের সংঘর্ষ নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মনিপুরের সংখ্যাগুরু মেইতেই গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে তপশীলি উপজাতি বা এসটি তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। ইম্ফল উপত্যকায় এসব উপজাতির বসবাস।

অন্যদিকে পাহাড়ি অঞ্চলে যে আদিবাসীরা বসবাস করেন তাদের বড় একটা অংশ মূলত কুকি চিন জনগোষ্ঠীর মানুষ। সেখানে নাগা কুকিরাও যেমন থাকেন কিছু সংখ্যায়, তেমনই আরও অনেক গোষ্ঠী আছে। মেইতেইরা তপশীলী উপজাতির তকমা পেয়ে গেলে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ বঞ্চিত হবেন, এ শঙ্কা ছিল।

এরপর গত ৩ মে হাইকোর্ট মেইতেইদের তপশীলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করতে বলে। এর বিরুদ্ধে গত বুধবার পাহাড়ি উপজাতি জনগোষ্ঠী বিক্ষোভ মিছিল করে। এখান থেকেই সহিংসতার শুরু। এরপর তা খুব দ্রুত পুরো রাজ্যেই ছড়িয়ে পড়ে।