দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপে গত বেশ কয়েকদিন ধরেই বয়ে যায় তীব্র তাপপ্রবাহ। ফলে চরম শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যে সৃষ্ট দাবানলে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। এতে স্পেন ও পর্তুগালে অন্তত ৩২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর এএফপি ও ডেইলি সাবাহ’র।
কার্লোস হেলথ থ্রি ইনস্টিটিউট বলছে, গত শুক্রবার পর্যন্ত স্পেনে ৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পর্তুগালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২৩৮ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। তবে ফ্রান্স, পর্তুগাল ও স্পেনে চলমান দাবানল মোকাবেলায় লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দমকলকর্মীরা।
এদিকে যুক্তরাজ্যে তাপমাত্রার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং আয়ারল্যান্ডেও দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের মতো তাপমাত্রা বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পর্তুগালসহ এর উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি এলাকায় গত বৃহস্পতিবার ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা জুলাই মাসের জন্য সর্বোচ্চ। এর মধ্যেই দেশগুলো তে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।
পর্তুগালের সিভিল ডিফেন্স জানায়, উত্তর পর্তুগালের ব্রাগানকা অঞ্চলে দাবানল নেভানোর সময় গত শুক্রবার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে এক পাইলট নিহত হয়েছেন। দাবানলে প্রায় ৬০ জন আহত হয়েছে এবং প্রায় ৯০০ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেই সাথে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও জানানো হয়, চলতি বছর দাবানলে পর্তুগালে ৩০ হাজার হেক্টর ভূমি পুড়ে গেছে। ২০১৭ সালের ভয়ংকর গ্রীষ্মকালের পর এবারই সবচেয়ে বেশি ভূমি পোড়ার ঘটনা ঘটলো।
প্রতিবেশী স্পেনের একস্ত্রেমাদুরা অঞ্চলের মনফ্রাগ ন্যাশনাল পার্কে গত বৃহস্পতিবার দাবানলের সৃষ্টি হয়। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রায় ২০টির মতো দাবানল এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার স্পেনে ৪৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে গত বছরের আগস্টে দেশটিতে সর্বোচ্চ ৪৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
ইউরোপের দক্ষিণ-পশ্চিম সংলগ্ন উত্তর আফ্রিকার মরক্কোতে দাবানলে একজনের মৃত্যু হয়েছে । উত্তর-পশ্চিম মরক্কোর বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে শত শত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া সংস্থা এর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। লোকজনের দৈনন্দিন জীবনযাপনের রুটিন পরিবর্তন করতে হবে। দেশটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (৩৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অতিক্রমের আশঙ্কা রয়েছে ৮০ শতাংশ।