ইরানে নতুন করে মেয়েদের স্কুলে স্কুলে বিষাক্ত গ্যাসের হামলা হচ্ছে এমন খবরে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির কমপক্ষে ২৬টি স্কুলের শত শত ছাত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নভেম্বর মাস থেকে এক হাজারেরও বেশি মেয়ে বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে গেছে। তাদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে ক্লান্তি, ঝিমুনির উপসর্গ দেখা গেছে।
ইরানে অনেক মানুষ সন্দেহ করছে মেয়েদের স্কুলগুলো যাতে বন্ধ করে দেয়া হয় সে লক্ষ্যে ইচ্ছা করে গ্যাস ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকার এখনও এ ধরণের ঘটনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
ইরানের সংবাদ সংস্থা ফারস জানিয়েছে, এই পর্যন্ত স্কুলে গ্যাস হামলার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ভাহিদি, প্রেসিডেন্ট রাইসি যাকে এ ধরণের বিষক্রিয়ার কারণ খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছেন – বলেছেন, এমন গ্রেপ্তারের খবর সঠিক নয়।
ভাহিদি বলেন, বিদেশী বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং ‘ভাড়াটে বিভিন্ন গ্রুপ’ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করেছে, যা মানুষজনের মধ্যে আতংক ছড়াচ্ছে।
কিছু ছাত্রী এবং অভিভাবক সন্দেহ করছে, দেশটির নীতি পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনি মৃত্যুর ঘটনা কেন্দ্র করে সম্প্রতি সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়ার শাস্তি হিসাবে মেয়েদের স্কুলগুলোকে টার্গেট করা হচ্ছে।
ইরানের স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, পাঁচটি শহরের ২৬টি মেয়েদের স্কুলে নতুন দফা এই বিষাক্ত গ্যাসের হামলা হয়েছে।
বিবিসি ফার্সি ভাষা বিভাগের যাচাই করা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে রাজধানী তেহরান, উত্তর-পশ্চিমের আরদাবিল এবং পশ্চিমের কেরমানমাহ শহরে মেয়েদের স্কুলের সামনে অ্যাম্বুলেন্স জড় হয়েছে এবং হাসপাতালে হাসপাতালে ঐসব স্কুলের ছাত্রীদের চিকিৎসা চলছে। তেহরানের একটি স্কুলের ছাত্রীদের হাসপাতালের বেডে অক্সিজেন মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা গেছে।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তেহরানের পূর্বাংশে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে ফুটপাতে ছাত্রীরা বসে রয়েছে। সেসময় একজন মা স্কুলের গেটের কাছে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছেন,‘ আমার মেয়ে কই?’ এক পুরুষ তাকে বলছেন, ‘তারা ছাত্রীদের গ্যাস দিয়ে বিষাক্রান্ত করেছে’।
বিবিসি ফার্সি বিভাগের এক জরিপে দেখা গেছে, রোববার পর্যন্ত ৮৩০ জন শিক্ষার্থী, যাদের অধিকাংশই মেয়ে, এমন বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
