উত্তর কোরিয়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম খারাপ ব্যবস্থা এবং এখনও দেশটিতে কোভিড ভ্যাকসিন, অ্যান্টিভাইরাল চিকিত্সার ওষুধ বা ব্যাপকভাবে নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। এরইমধ্যে মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে মোট ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণ ঘটেছে ৮ লাখ ২০ হাজার ৬২০ জনের এবং অন্তত ৩ লাখ ২৪ হাজার ৫৫০ জন চিকিৎসাধীন। খবর দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ’র।
এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, করোনার প্রদুর্ভাবের সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বড় পরিমাণ ভ্যাকসিন দিতে চাইলেও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন তা নেননি। তিনি শুধু সীমান্ত বন্ধের ব্যবস্থাই নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দেশটিতে বিপর্যয়ের খবর আসছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে উত্তর কোরিয়া মাত্র ৬৪ হাজার করোনার নমুনা পরীক্ষা করেছে।
নিউজ১৮ বাংলার খবরে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন জানিয়েছেন, এই কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব উত্তর কোরিয়ায় ‘মহা বিপর্যয়’ সৃষ্টি করেছে।
কেসিএনএ জানিয়েছে, “দেশের সব প্রদেশ, শহর এবং কাউন্টিগুলিতে সম্পূর্ণরূপে লকডাউন জারি করা হয়েছে এবং সমস্ত উৎপাদন, ক্ষেত্র, কর্মক্ষেত্র এবং আবাসিক স্থান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।”
টিকা না নেওয়া জনসংখ্যার মাধ্যমে রোগের বিস্তার রোধ করার জন্য ‘সর্বোচ্চ জরুরি কোয়ারেন্টাইন সিস্টেম’ সক্রিয় থাকা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ায় এখন প্রতিদিনই প্রচুর সংখ্যক মানুষ কোভিড আক্রান্ত হচ্ছেন। উত্তর কোরিয়া বৃহস্পতিবার জানায়, রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে অত্যন্ত সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট মিলেছে, যার পরেই কিম দেশব্যাপী লকডাউনের আদেশ দেন।
এটিই কোভিডের ক্ষেত্রে সরকারের প্রথম স্বীকারোক্তি এবং মহামারী শুরু হওয়ার পর দুই বছর কেটে গেলেও যে করোনাভাইরাস রোধে যে ব্যর্থ হয়েছে দেশ, তারই প্রমাণ এই প্রাদুর্ভাব। উত্তর কোরিয়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম খারাপ ব্যবস্থা এবং এখনও কোনও কোভিড ভ্যাকসিন, অ্যান্টিভাইরাল চিকিত্সার ওষুধ বা গণ নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই এই দেশে৷
এর আগে চিন থেকে কোভিড ভ্যাকসিনের প্রস্তাব এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স প্রকল্প প্রত্যাখ্যান করে উত্তর কোরিয়া। তবে বেইজিং এবং সিওল ফের সাহায্য এবং ভ্যাকসিনের নতুন প্রস্তাব জানিয়েছে।
কেসিএনএ অবশ্য নির্দিষ্ট করে জানায়নি যে নতুন সংক্রমণ এবং মৃত্যু ঘটা মানুষরা সকলেই কোভিড-১৯ পজিটিভ কী না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণহারে পরীক্ষা করাতে গেলে সমস্যায় পড়বে এই দেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়া সতর্ক করেছে, কিম আরও একটি পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার শাসনামলে এটি হবে সপ্তম পারমাণবিক পরীক্ষা এবং যে কোনও দিন তা ঘটতে পারে।