কারাগারে পরিচয়, সে পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব-প্রেম। সবশেষে প্রেম গড়াল পরিণয়ে। প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বিয়ে করলেন দুই কয়েদি। বুধবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, গতকাল মানবাধিকার সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির আয়োজনে বিবাহ সম্পন্ন করেন দুই কয়েদি আবদুল হালিম ও শাহানারা খাতুন। এর মধ্যে হালিম ধর্ষণ মামলায় আট বছর ধরে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে (কারাগার) আছেন। তিনি প্রতিবেশী রাজ্য আসামের দোরাং জেলার দলগাঁও থানা এলাকার রঙ্গনগারোপাথার গ্রামের বাসিন্দা। অন্যদিকে, শাহানারা খুনের মামলায় ছয় বছর ধরে একই কারাগারে আছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার নানুর থানার উচকারণ-বালিগড়ির বাসিন্দা।
এই দুই বন্দি জানান, গত তিন বছর আগে তাদের দুজনের পরিচয় হয়। এরপর গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে একে-অপরের প্রেমেও পড়ে যান তারা। এরপর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চান। দুই পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে তাতে সম্মতিও দেন।
এরপরই তারা মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেন হালিমের বাবা আবদুস সাত্তার। বিয়ের অনুমতি দেওয়ার জন্য গত ১৬ জুন পশ্চিমবঙ্গের কারামন্ত্রী অখিল গিরির দ্বারস্থ হয় তিনি। আবেদন মঞ্জুর হতেই বিয়ের আয়োজন শুরু হয়। মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে আইনিভাবে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
ইতোমধ্যে বীরভূমের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন নবদম্পতি। তারা জানান, ‘আমরা এখন মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছি। কারণ জেলের বাইরে বেরিয়ে নতুন এক সংসার পাতব।’
পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির অন্যতম কর্মকর্তা শামসুদ্দিন শেখ বলেন, ‘আবদুল হালিম ধর্ষণের মামলা ও শাহানারা খুনের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছে। দুজনেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়েছিল। তাই তাদের পরিবার কারামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়। তারা প্যারোলে মুক্তি পায়। এদিন তারা আইনি বিবাহ সারেন। আগামী ১৬ জুলাই তারা ফের সংশোধনাগারে ফিরে যাবেন।’