করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আরোপিত বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ১০ দিন ধরে চলা ট্রাক চালকদের অবরোধ ঠেকাতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন কানাডার রাজধানী অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসন।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
জিম ওয়াটসন বলেছেন, পুলিশের চেয়ে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়ায় শহরটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। চলমান বিক্ষোভ শহরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কানাডার রেডিও স্টেশন সিএফআরএ'তে ওয়াটসন বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা শহরের মধ্যে হর্ন এবং সাইরেন বাজিয়ে, বিভিন্ন জায়গায় আতশবাজি পুড়িয়ে রীতিমত উৎসবে পরিণত করে ক্রমাগত অসহিষ্ণু আচরণ করছেন।
তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে আমরা সংখ্যায় কমে গেছি এবং আমরা হেরে যাচ্ছি। কিন্তু এ অবস্থা বদলাতে হবে এবং আমাদের শহর ফিরে পেতে হবে আমাদের।’ তবে সেজন্য পরবর্তী সময়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি মেয়র।
কিন্তু গতকাল রোববার পুলিশ বলেছে, তারা কঠোর হবে, এর মধ্যে বিক্ষোভকারীদের যারা সাহায্য করতে আসবে তাদের গ্রেপ্তার করার মত পদক্ষেপও নিতে পারে পুলিশ।
শহর কর্তৃপক্ষের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান বিক্ষোভের কারণে শহরবাসীর নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার ওপর ঝুঁকি ও বিপদের আশঙ্কা থাকার প্রেক্ষাপটেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
এদিকে, ট্রাকচালকেরা অটোয়ার রাস্তাঘাট অচল করে দিয়েছে। ট্রাক দিয়ে এবং তাঁবু খাটিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে তারা। ফলে অটোয়ার কেন্দ্রস্থল অচল হয়ে যায়। বিক্ষোভের মুখে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং তার পরিবার রাজধানী ছেড়ে অজানা স্থানে চলে যান।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, এই আন্দোলনটা আমাদের স্বাধীনতার। এই আন্দোলনের কারণে আমাদের পরিচিত কিছু মানুষ, বন্ধু চাকরি হারিয়েছে। কোভিডের টিকা কতটা নিরাপদ এবং এর কার্যকারিতা নিয়েও আমি সন্দিহান।
অন্যদিকে, অটোয়ার বাসিন্দাদের অনেকেই ট্রাকচালকদের এই বিক্ষোভের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছেন। অধিকাংশ কানাডিয়ান টিকার পক্ষে এবং দেশটিতে এ পর্যন্ত টিকা পাওয়ার যোগ্য ৮৩ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ট্রাকচালকদের জন্য করোনার টিকা বাধ্যতামূলক করা ও বিধিনিষেধ আরোপের পর গত ৩০ জানুয়ারি থেকে ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামে এই বিক্ষোভ শুরু করে ট্রাকচালকরা। পরে টিকা এবং লকডাউন বিরোধী আরও হাজারো মানুষ এই বিক্ষোভে যোগ দেয়।