স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দুই দেশ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ১৩২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তুরস্কেই ৪৪ হাজার ২১৮ জন আর সিরিয়ায় ৫ হাজার ৯১৪ জন। খবর আল জাজিরার।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের আজ ১৯তম দিনে শুক্রবার তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ মৃতের সংখ্যা হালনাগাদের এই তথ্য জানিয়েছে।
এর মধ্যে গত ১৯ ফেব্রয়ারি অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি)। এখন এক্সক্যাভেটর দিয়ে সরানো হচ্ছে ধ্বংসস্তূপ। এর ফলে বেরিয়ে আসছে শত শত মরদেহ।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্কের ১১টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮৪ হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট ওই এলাকায় দুই লাখ বাড়ি তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী মার্চ মাসেই শুরু হবে এসব ভবন নির্মাণ। তবে জাতিসংঘ বলছে, এসব অঞ্চলে অন্তত ৫ লাখ নতুন বাড়ি তৈরি করা প্রয়োজন।
জাতিসংঘের উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিগত শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে দেড় কোটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এই দুর্যোগে ১১৬ মিলিয়ন থেকে ২১০ মিলিয়ন টন ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়েছে।
টিআরটির খবরে বলা হয়েছে, এই ধ্বংসস্তূপ দিয়ে ৩০ কিলোমিটার বাই ৩০ কিলোমিটারের স্তূপ করা যাবে। ইউএনডিপির তুরস্কের আবাসিক প্রতিনিধি লুইসা ভিনটন বলেন, ‘এটি তুরস্কের ইতিহাসে স্পষ্টতই বৃহত্তম ভূমিকম্প বিপর্যয়। সম্ভবত দেশটিকে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি করেছে।’
এদিকে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে। এর কিছুক্ষণ পর ফের ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে কেঁপে ওঠে তুরস্ক, সিরিয়া, লেবানন, সাইপ্রাসসহ আরও কয়েকটি দেশ। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তুরস্ক ও সিরিয়া।
এতে গুঁড়িয়ে যায় দুই দেশের হাজার হাজার হাসপাতাল, স্কুল ও অ্যাপার্টমেন্ট ভবন। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে দেশ দুটির লাখ লাখ মানুষ।