তুরস্ক ও সিরিয়ায় স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রোববার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে শুধু তুরস্কেই মারা গেছেন ৪০ হাজার ৬৪২ জন। আর সিরিয়া সরকার ও দেশটিতে জাতিসংঘের দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়ায় মৃত মানুষের সংখ্যা ৫ হাজার ৮০০ জন।
আল জাজিরা বলছে, ভূমিকম্পের ১২তম দিনে ধ্বংসস্তূপ থেকে ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো উদ্ধারকাজ চলছে। প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বহু আন্তর্জাতিক উদ্ধারকারী দল ভূমিকম্প বিধ্বস্ত বিশাল অঞ্চলটি থেকে চলে গেলেও সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে জীবিতরা এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে বের হয়ে আসছেন।
গত ৯ ফেব্রুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ১৭৮টি ট্রাক তুরস্ক থেকে সিরিয়ার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছে। এছাড়াও, তুরস্কে আশ্রয় নেওয়া সিরীয়দের মধ্যে ভূমিকম্পে নিহত ১ হাজার ৫২২ জনকে দাফনের জন্য নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে।
ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে দুই দেশের ৮৪ হাজারের বেশি ভবন ধসে পড়েছে। বিভিন্ন দেশের উদ্ধারকর্মীসহ বর্তমানে আড়াই লাখের বেশি কর্মী মাঠে কাজ করছে।
ভূমিকম্পটিকে গত ১০০ বছরের মধ্যে তুরস্কের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ১০০ কোটি ডলার সহায়তা চেয়েছে জাতিসংঘ।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে। এর কিছুক্ষণ পর ফের ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে কেঁপে ওঠে তুরস্ক, সিরিয়া, লেবানন, সাইপ্রাসসহ আরও কয়েকটি দেশ। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তুরস্ক ও সিরিয়া।