এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে নাইজেরিয়া। বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। এতে ১৪ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। খবর এএফপি’র।
রোববার দেশটির মানবিক বিষয়ক মন্ত্রী সাদিয়া উমর ফারুক এসব তথ্য জানিয়েছেন।
টুইটারে নাইজেরিয়ার মানবিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ বাধ্য হয়ে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। বন্যার পানিতে ৮২ হাজারের বেশি বাড়ি ভেসে গেছে এবং প্রায় এক লাখ ১০ হাজার হেক্টর কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে।
মানবিক বিষয়ক মন্ত্রী সাদিয়া উমর ফারুক বলেন, ‘রোববার পর্যন্ত বন্যায় ৬০৩ জন প্রাণ হারিয়েছে। গত সপ্তাহে এ সংখ্যা ছিল ৫০০ জন। কিছু রাজ্য সরকার বন্যার প্রস্তুতি গ্রহণ না করায় মৃতের এ সংখ্যা বেড়ে যায়। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ আনতে আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এনইএমএ) জানায়, নাইজেরিয়ায় সাধারনত জুন মাসে বর্ষা মৌসুম শুরু হলেও বিশেষ করে আগস্ট থেকে প্রচ- বৃষ্টিপাত হতে দেখা যায়। ২০১২ সালে বন্যায় ৩৬৩ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং ২১ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। এতে সার-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সামঞ্জমস্যহীন প্রভাবের এবং এ অঞ্চলের অনেক দেশ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে।
ধান উৎপাদনকারীরা সতর্ক করে বলেছে যে এ ভয়াবহ বন্যার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এর দামে প্রভাব পড়তে পারে। প্রায় দুই কোটি জনসংখ্যার এ দেশে স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ রয়েছে।
এ দিকে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম ও জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন গত মাসে বলেছে, নাইজেরিয়া দুর্ভিক্ষের চরম ঝুঁকি মোকাবেলা করা ছয়টি দেশের মধ্যে রয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ এবং মাসগুলিতে আরও প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রত্যাশিত। এছাড়াও আগামী কয়েকে দিন তারাবা, ইবোনি, বেনু এবং ক্রস রিভার স্টেটের কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের ও আলম্বিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।