একবার ব্যবহারের পর ফেলে দিতে হয়, এমন ১৯টি প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে ভারত। শুক্রবার থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। যদিও এখনও পলিথিনের ব্যবহার থেমে নেই দেশটিতে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। পরিচালনা করা হচ্ছে অভিযান। যদিও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, পলিথিন নিষিদ্ধের ফলে তাদের ব্যবসায় ক্ষতি হবে। খবর ভয়েজ অব আমেরিকা ও হিন্দুস্থান টাইমসের।
বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল দেশ ভারতে পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ প্লাস্টিক বর্জ্য। যে কারণে, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২২ সালের মধ্যে তার দেশকে প্লাস্টিক ব্যবহার মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিনের ব্যাগ স্ট্র, ছুরি-চামচ, ইয়ার বাড, মোড়ক, বেলুন, ক্যান্ডি এবং আইসক্রিমে ব্যবহার করা কাঠি, সিগারেটের প্যাকেটসহ আরও বেশ কিছু পণ্য রয়েছে।
খাদ্য, পানীয় এবং ভোগ্য পণ্য তৈরির কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে এ ধরনের প্লাস্টিকের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ না করার দাবি করা হয়েছিল। তাদের দাবি, প্লাস্টিকের বিকল্প জিনিস ব্যবহারের প্রস্তুতি তারা নিতে পারেনি।
তবে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের ব্যাগের ওপর দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা তাদের ব্যবসায় ক্ষতি করবে।
ভারত গত বছর ৭৫ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিকের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। যদিও বাজারের বিক্রেতা ও দোকানদাররা এখনো এ ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করছেন।
কলকাতার ব্যবসায়ী আলম ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, “যদি আমরা প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করতে না পারি, কাগজের ব্যাগ আমাদের জন্য পরবর্তী বিকল্প। বাজারে আরও মোটা কাগজের ব্যাগ রয়েছে, যেগুলো বড় দোকান ব্যবহার করে। কিন্তু ফুটপাথে আমার ব্যবসার জন্য সেই দামি ব্যাগগুলো ব্যবহার করার সামর্থ্য নেই।”
তিনি বলেন, “একটি মোটা কাগজের ব্যাগ ২ কেজি আম বহন করতে পারে, তার দাম কমপক্ষে ৮ টাকা। কিন্তু ৮ টাকা দিয়ে আমি অন্তত ২৫টি পলিথিনের ব্যাগ কিনতে পারি।”
কেউ কেউ বলেছেন, প্লাস্টিকের ব্যাগ সুবিধাজনক ও প্রয়োজনীয়।
এক কাঠমিস্ত্রি যিনি বাজার করতে এসেছেন, তিনি বলেন, “প্রতিবার বাসা থেকে কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে যাওয়া আমাদের দীর্ঘ দিনের সংস্কৃতি নয়। বিক্রেতারা আমাদের জন্য ব্যাগ দেবে, এটাই আমরা পছন্দ করি। পলিথিন ব্যাগগুলো সস্তা, যা তারা পণ্যের সাথে প্রায় বিনামূল্যে দেয়।”
ভারত প্রতি বছর ১৪ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক ব্যবহার করে। কিন্তু প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা থাকায় ও সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে এগুলো আবর্জনায় পরিণত হয়।
আর এসব আবর্জনার কারণে পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়ে। বর্জ্য অপসারণ লাইনগুলো আটকে যায়। তাছাড়া প্লাস্টিক বর্জ্য পানিতে ফেলায় অনেক জলজ প্রাণিরও মৃত্যু হয়।