পাকিস্তানে নতুন সরকার গঠন নিয়ে অবশেষে ধোঁয়াশা কাটল। পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টিই (পিপিপি) জোট বেঁধে এবার সরকার গঠন করবে। প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তার নামও চূড়ান্ত হয়ে গেছে।দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শেহবাজ শরিফ। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয়েছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে পিএমএল-এন প্রধান নওয়াজ শরিফ তার ছোট ভাই শেহবাজ শরিফকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদ এবং তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজকে পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত করেছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পিএমএল-এন থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে নওয়াজ শরিফের নাম এতদিন আলোচনা হলেও সবাইকে চমকে দিয়ে শাহবাজকে মনোনীত করেছেন তিনি। একই সময় পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মেয়ে মরিয়ম নওয়াজকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় দেশটিতে সরকার গঠন নিয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি জোট সরকার গঠনে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এনের পাশে থাকার ঘোষণা দেন।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ও মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পর চূড়ান্ত এই সিদ্ধান্ত জানায়। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিলাওয়াল জানান, কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের ক্ষেত্রে পিপিপির যেহেতু ম্যানডেট নেই, তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হচ্ছেন না।
তবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে পিএমএল-এনকে সাহায্য করবেন জানিয়ে পিপিপি প্রধান বলেন, ‘পিপিপি তার ইশতেহার অনুযায়ী চলবে। আমরা সরকারের অংশ হব না। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারে কোনো মন্ত্রীও আমাদের দল থেকে থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে দেশকে সংকট থেকে বের করে আনা। আমাদের পাকিস্তানকে সমর্থন ও শক্তিশালী করতে হবে।’
তার ওই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই রাতে বৈঠকে বসেন পিএমএল-এন, পিপিপি, এমকিউএম-পি ও পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদের (পিএমএল-কিউ) নেতারা। ওই বৈঠক শেষে জোট সরকার গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ জানিয়েছে, পিএমডব্লিএম’র সঙ্গে জোট গঠন করে কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে সরকার গঠন করবেন তারা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশটির জাতীয় নির্বাচনে ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ৯২টি আসন পেয়েছে। নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন জয় পেয়েছে ৭৫টি আসনে। আর বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি নিশ্চিত করেছে ৫৪টি আসন। এ অবস্থায় একটি জোট সরকার গঠনের জন্য পিপিপিসহ অন্য দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিলেন পিএমএল-এনের নওয়াজ শরিফ।