পাকিস্তানে আকস্মিক বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। রোববার দেশটির জলবায়ুমন্ত্রী এই বর্ষা মৌসুমকে ‘একটি মারাত্মক জলবায়ু বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন।
ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় গত মধ্য জুন থেকে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পানির তোড়ে শস্য ও অনেক গ্রাম ভেসে গেছে। সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত পাকিস্তানিদের নিরাপদে সরিয়ে আশ্রয় শিবিরে নিচ্ছে এবং খাদ্য সরবরাহ করছে।
পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের মধ্য জুনে বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে মানুষের প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে
এক হাজার ৩৩ জনে। এছাড়া খাইবার পাখতুন ও সিন্ধু প্রদেশে নতুন করে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
পাকিস্তানি সিনেটর ও দেশের জলবায়ু বিষয়ক শীর্ষ কর্মকতা শেরি রেহমান টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে তার অভিজ্ঞতা বর্নণা করে বলেন, ‘এই দশকে সবচেয়ে কঠিনতর একটি মারাত্মক জলবায়ু বিপর্যয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে চরম আবহাওয়া বিপর্যয়ের সামনে অবস্থান করছি, অবিরাম তীব্র দাবদাহ, দাবানল, আকস্মিক বন্যা, বহু হিমবাহ গলে যাওয়া, বন্যা পরিস্থিতি ও সারাদেশে দশকের দানব বন্যা অবিরাম ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নে দেশটির রাষ্ট্রদূত একটি ভিডিও বিবৃতি পুনরায় টুইট করেছেন।
প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র কামরান বঙ্গশ বলেন, রাতভর সোয়াত নদীর প্লাবনে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খাইবার পাখতুন প্রদেশের হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- বিশেষ করে চরসদ্দা ও নওশেরা জেলা। তাদেরকে বাড়ি থেকে সরিয়ে সরকারি ভবনের আশ্রয় শিবিরে নেয়া হয়েছে। তাদের অনেকে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছেন।
এই অভূতপূর্ব বর্ষা মৌসুম দেশের চারটি প্রদেশকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এতে প্রায় তিন লাখ বাড়িঘর, অসংখ্য রাস্তাঘাট ধ্বংস এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তুর্কি সংবাদ সংস্থা টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে রেহমান বলেন, অল্প বৃষ্টিতেই আমাদের পাকিস্তানের চারভাগের একভাগ বা তিন ভাগের একভাগ পানিতে তলিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘এটি কিছুটা বৈশ্বিক সংকট এবং ভূমির টেকসই উন্নয়নে অবশ্যই ভালো পরিকল্পনা দরকার।পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীল ফসলের পাশাপাশি ভালো কাঠামো থাকতে হবে।’
সরকার সারাদেশে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।
ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী একটি বিবৃতিতে বলেছেন, তারা দেশের উত্তরাঞ্চলের একটি দ্বীপে আটকে পড়া ২২ পর্যটককে আকাশপথে সরিয়ে নিয়েছেন।