গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, ফ্রান্সের ১১৮ বছর বয়সী লুসিল র্যান্ডনের মৃত্যুর পর ১১৫ বছর বয়সী স্প্যানিশ নারী মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা এখন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তির খেতাব অর্জন করেছেন।
২০২৩ সালের ২১ জানুয়ারির হিসাবে মোরেরার বয়স হচ্ছে ১১৫ বছর ১০ মাস ১৭ দিন। তার মা-বাবার যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের এক বছর পর ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোতে ১৯০৭ সালের ৪ মার্চ তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আট বছর পর স্পেনে ফিরে আসার পর তারা দেশটির কাতালোনিয়ায় চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ২২ বছর থেকে মোরেরা এই অঞ্চলের একটি নার্সিং হোম রেসিডএনসিয়া সান্তা মারিয়া দেল তুরাতে বসবাস করছেন।
এ খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নার্সিং হোম এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘তার স্বাস্থ্য ভালো আছে এবং আমাদেরকে নিয়মিত বিস্মিত করছেন। আসন্ন বিশেষ দিনটি (পরবর্তী জন্মদিন) উদযাপন করার জন্য আমরা এই ভবনেই ছোট পরিসরে আয়োজন করব।’
তার মেয়ের সহায়তায় বিশ্ব রেকর্ডধারী এই নারী প্রায়শই টুইটারে জীবনের পরামর্শমূলক বিষয় টুইট করেন।
তিনি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে বলেন যে তার দীর্ঘ জীবনের রহস্য হচ্ছে- শৃঙ্খলা, শান্তি, পরিবার, বন্ধুদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক, প্রকৃতির সঙ্গে যোগাযোগ, মানসিক স্থিতিশীলতা, উদ্বেগবিহীন থাকা, অনুশোচনা না রাখা, প্রচুর ইতিবাচক থাকা এবং বিষাক্ত লোকদের থেকে দূরে থাকা।
মোরেরা বলেন, ‘আমি মনে করি দীর্ঘায়ু ভাগ্যবান হওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। ভাগ্যতো বটেই, পাশাপাশি ভালো জেনেটিক্সও।’
বর্তমানে তার তিন সন্তান, ১১ জন নাতি-নাতনি রয়েছে। তার মেয়ে জানিয়েছেন, ‘তার (মা) কখনো হাসপাতালে যেতে হয়নি, তার কোনো হাড় ভাঙেনি। তিনি ভালো আছেন এবং তার কোনো ব্যথা নেই।’
মোরেরার অভিজ্ঞতার ঝুলি যে কত বড় তা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। কারণ তিনি উভয় বিশ্বযুদ্ধ দেখেছেন, স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ ও স্প্যানিশ ফ্লুও দেখেছেন। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, ২০২০ সালে ১১৩ তম জন্মদিন পালনের কিছু সপ্তাহ পর তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং দ্রুতই সুস্থ হয়ে ওঠেন।
তিনি ১৯৩১ সালে একজন কাতালান চিকিৎসক জোয়ান মোরেতকে বিয়ে করেন। তিনি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে বলেন যে তার বিয়ের দিন খুব ঘটনাবহুল ছিল। পুরোহিতের জন্য কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করার পর তারা জানতে পেরেছিলেন যে তিনি মারা গেছেন। তার স্বামী ৭২ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত এই দম্পতি চার দশক ধরে একসঙ্গে বসবাস করেছেন।
মোরেরা জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখেন এবং তা ধরে রাখার চেষ্টা করেন। তিনি মনে করেন যে প্রত্যেকে তাদের বয়স নির্বিশেষে প্রতিদিন নতুন কিছু শিখতে পারে।