চরম অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার সরকার পরিবর্তন চাইছেন দেশটির সরকারবিরোধীরা। এ দাবিতে শনিবার তারা দেশটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে তুলকালাম ঘটায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে, ঘোষণা দেন ১৩ জুলাই পদত্যাগের। বাদ যায়নি প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের বাড়িও, সেখানে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। খবর বিবিসি ও এনডিটিভির।
খবরে বলা হয়, শনিবার দিনভর প্রেডিসেন্টের বাসভবন দখল ও সেখানে উল্লাসের পর রাতে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের বাড়িতে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা রনিল বিক্রমাসিংহের ব্যক্তিগত বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন। এরপর সেখানে আগুন দিয়েছেন। এ ছাড়া ওই বাড়িতে থাকা যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে।
যদিও এই হামলার আগেই রনিল বিক্রমাসিংহে ঘোষণা দিয়েছেন, সব দলের অংশগ্রহণে সরকার গঠনে তিনি পদত্যাগ করতে রাজি।
শ্রীলঙ্কায় রিজার্ভ সংকট দেখা দেওয়ার পর থেকে দেশটিতে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া আমদানিনির্ভর ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্যের সংকট দেখা দেয়। এরপর থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করেন। এরপর রনিল বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা সরকারব্যবস্থায় পরিবর্তন চাইছেন। সেই সঙ্গে তারা এটাও চাইছেন, রাজাপক্ষে পরিবারকে রাজনীতি থেকে বিদায় নেবে। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের এই দাবি মেনে নেননি গোতাবায়া রাজাপক্ষে। ফলে বিক্ষোভ আরও জোরাল হয়। এরপর বিক্ষোভ দমনে গতকাল শুক্রবার কলম্বোয় কারফিউ জারি করা হয়। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা এই কারফিউ উপেক্ষা করে গোতাবায়ার বাসভবনে হামলা চালান। কিন্তু এর আগেই গোতাবায়াকে সেনা সদর দপ্তরে সরিয়ে নেওয়া হয়।
গোতাবায়ার বাসভবনে হামলার পর বিভিন্ন দলের নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন রনিল বিক্রমাসিংহে। এই বৈঠকের পরই তিনি পদত্যাগ করার কথা জানান।
এদিকে রনিল বিক্রমাসিংহের বাসায় হামলার বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করেছে এনডিটিভি। এতে দেখা যায়, বাসভবনের ভেতরে আগুন জ্বলছে। এ ছাড়া বিক্ষোভকারী বাইরে স্লোগান দিচ্ছেন।
এর আগে এ বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘিরে অন্তত ৩০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়। কিন্তু তাতেও কোনো ফল হয়নি। বিক্ষোভকারীরা প্রেডিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে সব কিছু তছনছ করেছেন। সুইমিং পুলে গোসল ও ভবনের ছাদে উঠে উল্লাস করতেও দেখা গেছে।