টানা ১১ দিন হাসা যাবে না, কেউ মারা গেলে স্বজনরা কাঁদতেও পারবেন না উচ্চস্বরে- ভাবতে অবাক লাগলেও দেশজুড়ে ঠিক এমন নিষেধাজ্ঞাই জারি করেছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। আর এসব নির্দেশনা অমান্য করলেই কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে নাগরিকদের।
উত্তর কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট কিম জং ইলের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উন প্রশাসন। এর আগে থেকে জিন্স প্যান্ট পরা, স্টাইল করে চুল কাটা কিংবা কান ফোটানো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
গত শুক্রবার ছিল উত্তর কোরিয়ার সাবেক নেতা কিম জং ইলের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী। তার প্রতি শোক জানাতে পিয়ংইয়ং কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এপির খবরে বলা হয়, কিম জং ইলের দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে ১১ দিনের জন্য দেশজুড়ে হাসি নিষিদ্ধ করছে কিম জং উন প্রশাসন। এছাড়া বাজার করা, মদ খাওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সব ধরনের বিনোদনমূলক কার্যকলাপ বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১১ দিন কিম জং ইলের মৃত্যু শোক পালন করবে উত্তর কোরিয়া। তাই ওই সময়ে কোনো শেষকৃত্য করা যাবে না। জন্মদিনও পালন করা যাবে না।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব নির্দেশ সংবলিত আদেশে বলা হয়েছে, ১১ দিন এসব নিয়ম ভাঙলে দেশটির বাসিন্দাদের কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
শোকের এই দিনগুলোতে উত্তর কোরিয়ার সাবেক এই নেতার নানা কর্মকাণ্ড প্রদর্শনীর মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র গণমাধ্যমে বলেন, তাদেরকে বলা হয়েছে, শোক পালনের এই সময়ে কোনো পরিবারের সদস্য মারা গেলে উচ্চস্বরে কাঁদা যাবে না। শোক পালন শেষ হয়ে গেলেই কেবল মৃতদেহ বের করা যাবে।
উল্লেখ্য, কিম জং ইল কিম পরিবারের দ্বিতীয় শাসক। দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত তিনি উত্তর কোরিয়া শাসন করেন। ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের খবর অনুসারে, মৃত্যুর দুইদিন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কিম জং ইলের মৃত্যুর খবর প্রচার করেনি।
মানবাধিকার রক্ষাকারী সংগঠনটি এক প্রতিবেদনে আরও দাবি করেছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি ‘কে-পপ’ শোনা এবং অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করার ‘অপরাধে’ ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে অন্তত সাতজনকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেন কিম। এর মধ্যে ৬টি ঘটনা ঘটেছে হেসান প্রদেশে। শুধু তাই নয়, ওই সময়ে কিমের নির্দেশে প্রিয়জনের মৃত্যুদণ্ড দেখতে নিকটাত্মীয়দের বাধ্য করা হয়েছিল বলে জানায় সংগঠনটি।