হিমালয়ের কোলঘেঁষা উত্তর ভারতের রাজ্য উত্তরাখন্ডে প্রশিক্ষণের সময় তুষারধসে অন্তত ১০ পর্বতারোহী নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২৮ জন।
মঙ্গলবার সকাল ৯ টার দিকে রাজ্যের উত্তরকাশী জেলায় হিমালয় পর্বতমালার ‘দ্রৌপদী কা ডান্ডা’ পর্বতের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বার্তা সংস্থা পিটিআই’র বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পুলিশ প্রধান অশোক কুমার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে গাড়ওয়াল হিমালয়ের গঙ্গোত্রী রেঞ্জের একটি পর্বতশৃঙ্গে ২৯ জনের একটি দল তুষার ধসের কবলে পড়ে। খবর পেয়ে উদ্ধারকারীরা বেঁচে যাওয়া আটজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসে।
নিখোঁজরা সবাই একটি পর্বতারোহণ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। যে এলাকায় তুষারধস হয়েছে সেটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৬ হাজার কিলোমিটার উঁচু বলে জানান অশোক কুমার।
তিনি জানান, দলে মোট ৩৪ জন ছিলেন। ঘটনাস্তলে তুষারধসে চাপা পড়া ১০ জনের মৃতদেহ দেখা গেছে, যার মধ্যে চারটি উদ্ধার করা হয়েছে। ২৮ জন এখনও নিখোঁজ । তবে অন্ধকার ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। বুধবার থেকে তা আবারও শুরু করা হবে। উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর সদস্যরাও।
তুষারধসের ঘটনায় নিখোঁজ ২৮ জনের নামের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে উত্তরাখণ্ড পুলিশ। এদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, আসাম, হরিয়ানা, গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও উত্তর প্রদেশের প্রশিক্ষণার্থীদের নাম রয়েছে।
উত্তরাখণ্ড রাজ্যের শীর্ষ নির্বাচিত আধিকারিক পুস্কর সিং ধামি বলেছেন, উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী। এছাড়া নিখোঁজদের সন্ধানে ভারতীয় বিমানবাহিনী দুটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইম্বিং অ্যান্ড মাউন্টেনিয়ারিং ফেডারেশনের আধিকারিক এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রাক্তন কর্মকর্তা অমিত চৌধুরী বলেছেন, ‘ভারতীয় পর্বতারোহণের ইতিহাসে এটি প্রথমবারের মতো ঘটেছে যে এত বড় প্রশিক্ষণার্থী পর্বতারোহী একটি তুষারধসে নিহত হয়েছেন।’
এ ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি দুঃখজনক যে, শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা। উদ্ধার অভিযান চলছে এবং কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।