একটা ফোন, ধরলেই নিমেষে বেহাত হয়ে যেত যাবতীয় গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সরকারি চাকুরিজীবী, সেনাবাহিনীর সদস্য, প্রবীণ নাগরিক- সাইবার প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাননি কেউই। অনলাইনে প্রায় ৭০ কোটি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে শনিবার এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের সাইবেরাবাদ পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা ভারত জুড়েই এই প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল। দেশটির ২৪টি রাজ্য, ৮টি মেট্রোপলিটন শহর মিলিয়ে মোট ৬৬ কোটি ৯০ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য হাতিয়ে তা বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ আটককৃত যুবকের বিরুদ্ধে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই যুবক হরিয়ানার ফরিদাবাদে ‘ইন্সপায়ারওয়েবজ’ নামক একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতারণা চক্র পরিচালনা করত। বিভিন্ন ক্লাউড ড্রাইভ লিঙ্কের মাধ্যমে বিক্রি করত ডেটাবেস। এই ডেটাবেস আবার আমির সোহেল ও মদন গোপাল নামক দুই ব্যক্তির কাছ থেকে সংগ্রহ করত বিনয়। পুলিশ সেই যুবকের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটককৃত যুবকের নাম বিনয় ভরদ্বাজ। তার কাছ থেকে বাইজুস ও ভেদান্তু-দুই অনলাইন এডুকেশন অ্যাপ্লিকেশনের সমস্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য় পাওয়া গেছে। এছাড়াও দেশের ৮টি শহরের ১ লাখ ৮৪ হাজার ক্যাব ব্যবহারকারী এবং গুজরাট ও ৬টি শহরের সাড়ে ৪ লাখ বেতনভুক্ত কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্যও চুরি করে বিনয়, এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ভারতের বড় বড় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন জিএসটি, আরটিও, অ্য়ামাজন, ইউটিউব, পেটিএম, বিগ বাস্কেট, বুক মাই শো, ইন্সটাগ্রাম, পলিসি বাজার, আপস্টক্সের মতো সংস্থার গ্রাহকদের যাবতীয় তথ্যও হাতিয়ে নিয়েছে সেই প্রতারক।
এছাড়াও দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগ, সরকারি কর্মী, প্যান কার্ড হোল্ডার, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী, প্রবীণ নাগরিক, দিল্লি ইলেকট্রিসিটির ব্যবহারকারী, ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্ট হোল্ডার, নিট শিক্ষার্থী, বিমা, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড ব্যবহারকারীদের গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় তথ্য চুরি করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলেই অভিযোগ।