প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

নভেম্বরে এলসি খোলা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ বিলিয়ন ডলার

মেহেদী হাসান
০৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:২১:০৬ | আপডেট: ২ years আগে
নভেম্বরে এলসি খোলা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ বিলিয়ন ডলার

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানির ওপর বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে। ফলে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি বা ঋণপত্র) খোলার হার কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে এলসি খোলার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৪.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। যা এর আগের মাস অক্টোবরে ছিলো ৪.৮৪ বিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ৬.৫১ বিলিয়ন ডলার এবং আগস্টে ৬.৬১ বিলিয়ন ডলার। তবে গত বছরের এই সময় অর্থাৎ নভেম্বরে এর পরিমাণ ছিল ৭.৬৭ বিলিয়ন ডলার।

এ বিষয়ে ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইমরানুল হক দ্য বিজনেস পোস্ট’কে বলেন, ব্যাংকগুলো নতুন এলসি খুলতে এখন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং রপ্তানি আয়ে ধীরগতির কারণে বেশিরভাগ ব্যাংক এখন ডলার ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে পুরনো এলসি নিষ্পত্তিতেও আমরা এখন চাপের মুখে আছি।’

সম্প্রতি নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকগুলো যে ধাক্কা খেয়েছে তা জানুয়ারিতে কাটিয়ে উঠতে পারবে বলেও আশা করেন তিনি।

এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে বিলাসবহুল ও অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এলসি (ঋণপত্র) খোলার সময় সম্পূর্ণ মূল্য অগ্রিম পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই সাথে ৩ মিলিয়ন ডলার বা তার বেশি মূল্যের এলসি খোলার একদিন আগে ব্যাংগুলোকে এটি জানাতে বলা হয়েছিল।

আরও পড়ুন-  একদিনে ৪ হাজার কোটি টাকার তারল্য সুবিধা নিলো ৫ ইসলামী ব্যাংক

পূবালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা এলসি খোলা সীমিত করেছি, এটা সত্য। কারণ আগে একজন ব্যাক্তি ৩০০ মিলিয়ন ডলারের জন্য এলসি খুলতে পারতো। কিন্তু এখন সর্বোচ্চ ১২০ মিলিয়ন ডলারের এলসি খুলতে পারছে।’

তিনি বলেন, ‘আমদানি কমানোর জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও বিলাসবহুল পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। এটি বন্ধ করতে সরকারের আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

এদিকে, নভেম্বরে এলসি নিষ্পত্তি কমে ৫.৬০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা এর আগের মাস অক্টোবরে ছিলো ৬.৪১ বিলিয়ন ডলার। তবে গত বছরের নভেম্বরে এর পরিমাণ ৬.৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিলো।

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, ‘এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ এখনও বেশি এবং এটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করে।’

আরও পড়ুন-  ‘আতঙ্কে’ ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা তুলছেন আমানতকারীরা

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববাজারে বিলম্বিত অর্থপ্রদান এবং পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিই উচ্চ এলসি নিষ্পত্তির মূল কারণ। এটি আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩.৭৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ২৬.২৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে। তবে গত বছরের আগস্টে মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।