দীর্ঘ এক যুগ পর বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেলস পার্ক) বিএনপি’র বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরের পর এটি বিএনপির পঞ্চম বিভাগীয় গণসমাবেশ। এ উপলক্ষে শুক্রবার রাত থেকেই সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। বিকেল ২টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল বিভাগীয় এই গণসমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশের প্রধান বক্তা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিশেষ অতিথি আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সমাবেশস্থল থেকে দেড় কিলেমিটার রাস্তা জুড়ে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে মানুষ সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও ইউনিট থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পায়ে হেঁটে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন।
তাদের অনেকের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দলের লোকজন তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করায় তারা শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে বাধার সম্মুখীন হন।
এদিকে শনিবার বরিশাল নগরীতে দলের বিভাগীয় সমাবেশস্থলে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় বিএনপির পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে হামলায় বিএনপির ৯ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে, বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ সিটি শাখার নেতা ইশরাকও অক্ষত ছিলেন এবং সকাল ৯টার দিকে তিনি সমাবেশস্থলে পৌঁছান। হামলার সময় বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে বিএনপি নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।
ইশরাক জানান, সকালে গৌরনদী উপজেলার মাহিলারা বাজারে পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত তাদের মোটরসাইকেলে হামলা চালায়।
বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে গত কয়েকদিন ধরে বরিশাল বিভাগে বাস, লঞ্চ, স্পিডবোট, তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে সড়ক ও নৌপথে সরকারি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাস, থ্রি-হুইলার, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখার কারণ এখনও জানা যায়নি।
আরও পড়ুন- বরিশালে এবার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন
এদিকে পুলিশ জানিয়েছেন, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বিএনপি তার চলমান আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দেয়।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের অভিযানে দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। তবে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির এই দাবি তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
শনিবারের সমাবেশটি হবে বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির পঞ্চম সমাবেশ। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয় ও চতুর্থটি যথাক্রমে খুলনা ও রংপুরে।