প্রচ্ছদ ›› আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে’ নিবন্ধ প্রকাশ

‘বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিতে পারে পাকিস্তানের নেতৃত্ব’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৪ আগস্ট ২০২২ ১১:৪০:১৭ | আপডেট: ২ years আগে
‘বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিতে পারে পাকিস্তানের নেতৃত্ব’

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে সেখান থেকে পাকিস্তানের নেতৃত্বকে শিক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের

বলা হয়েছে, পাকিস্তানের নেতৃত্ব বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে। তবে প্রধান বিষয় হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন যা প্রতিরক্ষা ও গণতন্ত্র উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

সাহেবজাদা রিয়াজ নূর তার প্রবন্ধে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন এবং একে ‘গর্ব ও সক্ষমতার প্রতীক’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

আরও পড়ুন- জুলাইয়ে রপ্তানি বেড়েছে ১৪.৭২ শতাংশ

‘টেকওয়েস ফ্রম বাংলাদেশ’স লিডারশিপ’ শিরোনামের প্রবন্ধটিতে বলা হয়, ১৯৯২ সালের প্রথম দিকে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিষয় ও পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি রাজনৈতিক প্রভাবের সঙ্গে অর্থনৈতিক নীতির ভারসাম্যের কাজটি গ্রহণ করেছিলেন।

শেখ হাসিনা এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন যাদের অর্থনৈতিক সাফল্য চারটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক উন্নয়ন, রপ্তানিমুখী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাণিজ্য উদারীকরণ ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ।

আরও পড়ুন- জনগণের আস্থাই সরকারের সাফল্যের চাবিকাঠি: প্রধানমন্ত্রী

এক সম্মেলনে একজন অর্থনীতিবিদ তাকে বাণিজ্য উদারীকরণের সুবিধা সম্পর্কে অবহিত করতে শুরু করলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনাকে বাণিজ্য উদারীকরণের বিষয়ে আমাকে বোঝাতে হবে না। আমি যখন যুগোস্লাভিয়ান সীমান্তের ইতালীয় শহর ট্রিয়েস্টে আমার পদার্থবিদ স্বামীর সঙ্গে থাকতাম, আমি দেখেছি সীমান্ত সপ্তাহে তিনবার খোলা হচ্ছে এবং দু’পাশ থেকে মানুষ যাতায়াত করছে, পণ্য ক্রয় করছে এবং ফিরে যাচ্ছে।’

আর এতে প্রমাণিত হয় শেখ হাসিনা অন্যান্য বিষয়, যে সবের প্রতি রাজনীতিকরা আকৃষ্ট হয়, থেকে অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিয়েছেন; রিয়াজ নূর তার প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ১৯৭১ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশে জবাবদিহিমূলক প্রচারণা ও সামরিক শাসনে প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ২০০৯ সাল থেকে সেনাবাহিনী পেছনের আসন নেয়। বাংলাদেশে বেসামরিক সরকার কম ঘন ঘন ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে।

আরও পড়ুন- জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ২ বিলিয়ন ডলার

প্রবন্ধে বলা হয়, শাসনের সামান্য অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী তীক্ষ্ণতা ও প্রত্যয় ছিল অর্থনৈতিক অগ্রগতিই দেশের দারিদ্র্য বিমোচনের একমাত্র উপায়। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। ১৯৭০ সালে দেশটি পাকিস্তানের তুলনায় ৭৫ শতাংশ দরিদ্র ছিল কিন্তু বর্তমানে এটি ৪৫ শতাংশ ধনী। তখন দেশে ১০ মিলিয়ন বেশি মানুষ ছিল। তবে বর্তমানে পাকিস্তানের ২৩০ মিলিয়নের তুলনায় বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭০ মিলিয়ন।

২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যেখানে পাকিস্তানের রপ্তানি আয় ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। পাকিস্তানে মাথাপিছু আয় এক হাজার ৫৪৩ ডলারের তুলনায় বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় দুই হাজার ২২৭ ডলার।

২০২২ সালে পাকিস্তানের ৩৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তুলনায় বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশ এবং পাকিস্তানের পূর্ব ১২-১৫ শতাংশ যা বর্তমানে বেড়ে ২১ শতাংশ এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে তা আরও বাড়তে পারে। এছাড়া পাকিস্তানি রুপির তুলনায় বাংলাদেশি টাকা অনেক শক্তিশালী।

আরও পড়ুন- ‘বাংলাদেশের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-জার্মানিতে’

প্রবন্ধে বলা হয়, উল্লেখযোগ্যভাবে অর্থনীতিতে নারীর উচ্চ অংশগ্রহণসহ বাংলাদেশে ভালো সাক্ষরতার হার রয়েছে।পাকিস্তানে রাজনৈতিক দলগুলো ব্যক্তিগত লাভের প্রতি আগ্রহী। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বারবার কারসাজি শক্তিশালী, গণতান্ত্রিক ও অ-বংশবাদী দলগুলোর প্রসারকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইনের শাসন, শক্তিশালী বেসামরিক প্রতিষ্ঠান ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত বলেও প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়।